“ধর্ম মানুষদের জন্য আফিমের মত” কথাটা অনেক শুনেছি। এর অর্থটা কী?
কথাটার অর্থ হল ধনী, বুর্জোয়া, ক্ষমতাসীন ও পুঁজিবাদীরা দরিদ্র এবং প্রলেতারিয়েত সম্প্রদায়ের কাছে তাদের পার্থিব দুর্দশা, দারিদ্র্য, কষ্ট ও পুঁজির অভাবের বিনিময়ে সান্ত্বনা হিসেবে ধর্মকে উপস্থাপন করে। এটা মার্কসের শ্রেণি সংগ্রাম তত্ত্বের আলোকে প্রদত্ত বক্তব্য। মার্কসই সর্বপ্রথম এই বক্তব্য দিয়েছে।
কথাটা কখনো সঠিক অর্থে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সেটা দ্বীনকে সঠিক হিসেবে ধরে নেওয়া ব্যতিরেকেই। অনেক সময় ভ্রষ্ট লোকেরা ধর্মকে মানুষদের আফিম হিসেবে আসলেই ব্যবহার করে। তারা হত্যা করে, যুলুম করে এবং চুরি করে। তখন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা জনসম্মুখে বেরিয়ে এসে মানুষকে ধর্ম দিয়ে শান্ত করে এবং শাসকদের কাজকে বৈধতা প্রদান করে। এটা প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টানদের মাঝে দেখা যায়। আপনি যদি লুথার-কেলভিনদের লেখা পড়েন তাহলে এমন দৃষ্টান্ত পাবেন। মুসলিমদের মাঝেও এমন কিছু দৃষ্টান্ত অজানা নয়।
আর দ্বীন যে মানুষকে দুনিয়ার বদলে আখিরাতের সান্ত্বনা প্রদান করে, এটা দ্বীনের অন্যতম একটা সেরা বৈশিষ্ট্য। জীবনের অনেক বিপদ-আপদ এবং দুঃখ-দুর্দশা আছে যার সমাধান কেবল ধৈর্যধারণের মাধ্যমেই হতে পারে। ধৈর্য ধরলে মানসিক তৃপ্তি ও তুষ্টি আসে এবং জীবনধারণ করা সহজ হয়। এটা ব্যক্তির মানসিক সুস্থতার জন্যও অপরিহার্য।
বাকি রইল মার্ক্সের বক্তব্যের সমস্যা। মার্ক্সের বক্তব্য অনুযায়ী ধর্ম মূলত সৃষ্টিই করা হয়েছে বুর্জোয়া শ্রেণিকে টিকিয়ে রাখার জন্য। এটা যুক্তিহীন দুর্বল কথা। একে তো দ্বীনের অস্তিত্বের দলীলসমূহ থেকে তা বোঝা যায়। অধিকন্তু ইতিহাসে যত রাজনৈতিক জাগরণ আমরা দেখতে পাই তার অধিকাংশ মূলত ধর্মীয় চেতনা থেকেই হয়েছিল। আর এটা মার্ক্সের দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের সাথে সাংঘর্ষিক। বস্তুত ইতিহাসের বৃহৎ পরিবর্তনসমূহ সংঘটিত হয়েছে নবী এবং বড় বড় তাগুতদের মাধ্যমে। যেমন: মুসা, সুলাইমান, মুহাম্মাদ আলাইহিমুস সালাতু ওয়াস-সালাম। তদ্রূপ যুল-ক্বারনাইন কিংবা মুসলিম খলীফাবৃন্দ। আবার তাগুতদের মাঝে আছে নমরূয, হালাকু, হিটলার প্রমুখ। সুতরাং সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন থেকে ধর্মকে বিচ্ছিন্ন রাখার বক্তব্য দুর্বল।
তাছাড়া সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস তথা বুর্জোয়া-প্রলেতারিয়েত দ্বন্দ্বের বহু আগ থেকেই দ্বীনের অস্তিত্ব বিদ্যমান। প্রাচীনতম সমাজেও দ্বীন-ধর্মের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। প্লুতার্কের বিখ্যাত উক্তি না বললেই নয়, “এমন বহু নগরী আছে যেখানে প্রাসাদ নেই, বিনোদনকেন্দ্র নেই কিংবা খাদ্য সঞ্চয়ের স্থান নেই। কিন্তু এমন কোনো নগরী নেই যেখানে উপাসনালয় নেই।”
সামাজিক শ্রেণি বৈষম্য এবং বুর্জোয়া শ্রেণির উত্থান ষোড়শ শতাব্দীর আগে হয়নি। প্রাচীন যুগে (গ্রীক-ভারতীয়-মিশরীয়) যে সকল স্তর ছিল সেগুলো হয় বংশীয় নতুবা সামরিক বিন্যাস ছিল। এমনকি প্লেটোর ‘রিপাবলিক’-এ আমরা তাই দেখতে পাই।
[আ.ব.]
কথাটা কখনো সঠিক অর্থে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সেটা দ্বীনকে সঠিক হিসেবে ধরে নেওয়া ব্যতিরেকেই। অনেক সময় ভ্রষ্ট লোকেরা ধর্মকে মানুষদের আফিম হিসেবে আসলেই ব্যবহার করে। তারা হত্যা করে, যুলুম করে এবং চুরি করে। তখন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা জনসম্মুখে বেরিয়ে এসে মানুষকে ধর্ম দিয়ে শান্ত করে এবং শাসকদের কাজকে বৈধতা প্রদান করে। এটা প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টানদের মাঝে দেখা যায়। আপনি যদি লুথার-কেলভিনদের লেখা পড়েন তাহলে এমন দৃষ্টান্ত পাবেন। মুসলিমদের মাঝেও এমন কিছু দৃষ্টান্ত অজানা নয়।
আর দ্বীন যে মানুষকে দুনিয়ার বদলে আখিরাতের সান্ত্বনা প্রদান করে, এটা দ্বীনের অন্যতম একটা সেরা বৈশিষ্ট্য। জীবনের অনেক বিপদ-আপদ এবং দুঃখ-দুর্দশা আছে যার সমাধান কেবল ধৈর্যধারণের মাধ্যমেই হতে পারে। ধৈর্য ধরলে মানসিক তৃপ্তি ও তুষ্টি আসে এবং জীবনধারণ করা সহজ হয়। এটা ব্যক্তির মানসিক সুস্থতার জন্যও অপরিহার্য।
বাকি রইল মার্ক্সের বক্তব্যের সমস্যা। মার্ক্সের বক্তব্য অনুযায়ী ধর্ম মূলত সৃষ্টিই করা হয়েছে বুর্জোয়া শ্রেণিকে টিকিয়ে রাখার জন্য। এটা যুক্তিহীন দুর্বল কথা। একে তো দ্বীনের অস্তিত্বের দলীলসমূহ থেকে তা বোঝা যায়। অধিকন্তু ইতিহাসে যত রাজনৈতিক জাগরণ আমরা দেখতে পাই তার অধিকাংশ মূলত ধর্মীয় চেতনা থেকেই হয়েছিল। আর এটা মার্ক্সের দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের সাথে সাংঘর্ষিক। বস্তুত ইতিহাসের বৃহৎ পরিবর্তনসমূহ সংঘটিত হয়েছে নবী এবং বড় বড় তাগুতদের মাধ্যমে। যেমন: মুসা, সুলাইমান, মুহাম্মাদ আলাইহিমুস সালাতু ওয়াস-সালাম। তদ্রূপ যুল-ক্বারনাইন কিংবা মুসলিম খলীফাবৃন্দ। আবার তাগুতদের মাঝে আছে নমরূয, হালাকু, হিটলার প্রমুখ। সুতরাং সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন থেকে ধর্মকে বিচ্ছিন্ন রাখার বক্তব্য দুর্বল।
তাছাড়া সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস তথা বুর্জোয়া-প্রলেতারিয়েত দ্বন্দ্বের বহু আগ থেকেই দ্বীনের অস্তিত্ব বিদ্যমান। প্রাচীনতম সমাজেও দ্বীন-ধর্মের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। প্লুতার্কের বিখ্যাত উক্তি না বললেই নয়, “এমন বহু নগরী আছে যেখানে প্রাসাদ নেই, বিনোদনকেন্দ্র নেই কিংবা খাদ্য সঞ্চয়ের স্থান নেই। কিন্তু এমন কোনো নগরী নেই যেখানে উপাসনালয় নেই।”
সামাজিক শ্রেণি বৈষম্য এবং বুর্জোয়া শ্রেণির উত্থান ষোড়শ শতাব্দীর আগে হয়নি। প্রাচীন যুগে (গ্রীক-ভারতীয়-মিশরীয়) যে সকল স্তর ছিল সেগুলো হয় বংশীয় নতুবা সামরিক বিন্যাস ছিল। এমনকি প্লেটোর ‘রিপাবলিক’-এ আমরা তাই দেখতে পাই।
[আ.ব.]